দৃষ্টি আকর্ষণ: বিভিন্ন ব্লগে নানা সময়ের লেখাগুলো এখানে জমা প্রক্রিয়া চলছে। কয়েকটি পাতা এখনো অসম্পূর্ণ। খুব শীঘ্রই সবকিছু সম্পন্ন হবে। ফিডব্যাক জানাতে পারেন এখানে।

১২ এপ্রিল, ২০১০

ছেলেবেলার বোশেখী স্বপ্নমেলা

খুব ছোটবেলায় যখন আমরা গ্রামে থাকতাম, তখনকার স্মৃতি তেমন একটা মনে নেই। কেবল মনে আছে, একবার প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির মাঝে ধানক্ষেতের আইল পার হতে গিয়ে পায়ে বড়ই কাঁটা ফুটিয়ে ফেললাম। সে কি যন্ত্রণা। আমার যেটুকু ব্যথা, তার চেয়ে বেশি চিৎকার, তার সাথে মায়ের উৎকন্ঠ আর আমার বৃদ্ধা দিদিমার চারিদিকে ডাকাডাকিতে সারা পাড়া একাকার।
আমার স্কুল জীবন শুরু হয় শহরে। গ্রাম ছেড়ে চলে আসি। প্রতি বছর পরীক্ষা দিয়েই একমাসের বন্ধ। সোজা বাড়িতে দৌড় ছুটি কাটাতে। আসার সময় প্রতিবার মন খারাপ হওয়া। একটু একটু করে বড় হতে থাকি। শহুরে বন্ধু বাড়তে থাকে। তাদের সাথে সখ্যতা হয় আর এরই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ির প্রতি টান কমতে থাকে। এর একটা বড় কারণ ছিল এটাও, গ্রামের বিদ্যুতের অনুপস্থিতি। আর, কেন যেন প্রতি ঈদের ছুটিতেই বাবার গ্রামের বাড়িপ্রীতি অনাবশ্যক রকমের বাড়-বাড়ন্ত হয়! কত চিন্তা-ভাবনা করে রাখা, এবার এই এই নাটক দেখবো, এই সার্কাস দেখবো, কোথায় কি? সব ফেলে বসে থাকো। বিদ্যুৎই যেখানে নাই, সেখানে টেলিভিশন তো স্বপ্নলোকের ভাবনা। তাই, আর বাড়ি যেতে মন টানতো না। কিন্তু, তারপরও দেখা যেত বছর ঘুরে এপ্রিল এলেই আমরা সবাই আবারও গ্রামে!

ছোটবেলায় একটা খুব মজার ব্যাপার ছিল, গ্রাম থেকে থেকে  ফেরার সময় যাকেই পায়ে হাত দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে মাথা নুয়ে দিতাম, সে-ই বুকে জড়িয়ে নিতো, আর হাতে গুঁজে দিতো দু'টাকা- পাঁচ টাকার একটা কড়কড়ে নোট। বাধা নিয়ম। আমাকে এত আর ভাইয়াকে পাঁচ কিংবা দশ টাকা। খরচ হতো না। জমে যেতো। এই টাকার পরিমাণটা বেড়ে যেত পহেলা বৈশাখে।

৫ এপ্রিল, ২০১০

মামণিয়া

আজ পরীক্ষা ছিল। সারা বছর ফাঁকিবাজি। পরীক্ষার দু'দিন আগে তাই চোখে ঘুম নেই। তার উপর এই পরীক্ষা হল ব্যবসায় শিক্ষা সম্পর্কিত। গণিত সংশ্লিষ্ট হওয়া উচিত, গণিতের দেখা নেই, আছে কেবল মুখস্থ বিদ্যার চর্চা। যে যত মুখস্থ করতে পারবে, তারই জয়জয়কার। মুখস্থ করে গামলা ভর্তি কর, পরীক্ষা হলে গিয়ে সেটা উপুর করে ঢেলে দিয়ে আসো। গামলায় ফুটো, তো তোমার মাথায় বারি! আমারটা গামলা বলবো কিনা, তাই নিয়ে সন্দেহ, তার চেয়ে বলা ভালো চালুনি! যার সবটাই ফুঁটো! চোখ-মুখ বুজে মুখস্থ করে যাচ্ছি। দুই লাইন পড়ি, পরের লাইনে গেলে প্রথম লাইন ভুলে যাচ্ছি। একটা বিতিকিচ্ছিরি রকমের অবস্থা।

গেল সপ্তাহের মাঝে থেকে একটা সুসংবাদ পেয়ে মনটা বেশ খুশি খুশি। পৃথিবীতে নতুন অতিথি এসেছে। ফুটফুটে একটা গোলাপী নারী। আর সবাই এসেই যেমন সদম্ভে তার অস্তিত্ব জানান দেয় চিৎকার করে, সারা হাসপাতাল কাঁপিয়ে, সবাইকে হাসির কলরোলে মাতিয়ে, এ শিশু তেমন নয়। সে শুরু থেকেই চুপচাপ। মায়ের শরীরে যখন ছিল, তখনও তেমন জ্বালাতন করেনি, পৃথিবীর আলো গায়ে মেখেও সে চুপ। এক মিনিট যায়, দু' মিনিট যায়, এমনি করে বেশ কিছুক্ষণ কেটে যায়। টুঁ শব্দও বের হয় না তার মুখ থেকে। সবাই একটু চিন্তিত হয়। চিকিৎসকরা আশ্বাস দেন, না, দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে। বাচ্চারা মাঝে মাঝে এমন একটু আধটু করেই।

২ এপ্রিল, ২০১০

ব্লগার নিয়া অণুকাব্য!!

এক যে অরণ্য
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এক্কেরে বন্য;
গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে
যুদ্ধাপরাধীর বিচার করেই ছাড়বে।

স্বপ্নজয় ভাই
কি সব পোস্টায়!!
তুই তোকারি'তে ভরা
প্রেমের গপ্প লেখে রাত জাইগা!!

চাঙ্কু রে নিয়া কি কমু?
তার কাছে কি বেইল পামু!!
"ভালোবাসা তুমি কুতায়??
ভাল বাসার সন্ধান কি এত সহজে পাওয়া যায়!!

ব্লগার নিয়া অণুকাব্য!!-২

শ্রদ্ধেয় মনজুরুল ভাই
তাকে বড় ভাল পাই
একজন মুক্তিযোদ্ধা
আর এখন ব্লগের এনসাইক্লোপিডিয়া!!

অক্ষর ভাই'র কথা বলব কি আর
অদ্ভূত সব মন্তব্য করায় জুড়ি মেলা ভার
’হাসতে হাসতে পরে গেলাম’
মনে হয় তার আবিষ্কার!!

অপ্সরা আপু আছেন যিনি
আফ্রোদিতি নামেও পরিচিত তিনি
তার ব্লগের নাম হ্ওয়া উচিত ছিল
”এসো, সকলে রান্না শিখি!!”

অকথনকথনপটিয়শস-তৃতীয় সংখ্যা

২৭ রবিউস সানি, ১৪৩০ হিজরি
২৪ এপ্রিল ১০, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ
১১ বৈশাখ, ১৪১৬ বাংলা

সম্পাদক হিমালয়৭৭৭
সহসম্পাদক মুক্তবয়ান কর্তৃক প্রকাশিত।

সম্পাদকীয়:
ব্যাপারটা ভাববার মতই – আক্কাস আলীর পুকুরের শোল মাছেরা গজার মাছকে ১৫দিনের মধ্যে পুকুর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে; যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে গজার রাক্ষুসে মাছ, তাদের কারণে ছোট নিরীহ প্রজাতির মাছগুলো পুকুরে সন্ত্রস্ত থাকে, সুতরাং গজার হটিয়ে সেখানে নিরীহ মাছদের অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করা হবে এমনটাই শোল মাছদের যুক্তি। যতদূর জানি, শোলও রাক্ষুসে মাছ, সেক্ষেত্রে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গজারকে হটিয়ে তারা কী উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইছে সেটা বুঝার জন্য মৎস্যবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই মোটেই। এদেশের নোংরা রাজনীতির হাওয়া পুকুরের তলদেশে মাছেদের মধ্যেও পৌছে গেছে, এটা ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছি।

সে যা-ই হোক, আমাদের ১১৩৯টি নীতিমালার কয়েকটি আজও শেয়ার করছি ধারাবাহিকভাবে:

প্রতিকাব্য না!! অণুকাব্যই!!

১.
মিষ্টি হেসে মেরেছে ছুঁড়ে
ভালোবাসার বান;
আর বলছিস তোরা কিনা
"ওরে, antiseptic আন!!"

২.
"ভালোবাসি, ভালোবাসি
সেই সুরে কাছে, দূরে"
প্রেমিকা দেয় মিষ্টি হাসি
প্রেমিকের হয় পকেট খালি!!

অকথনকথনপটিয়শস- দ্বিতীয় সংখ্যা

২০ রবিউস সানি, ১৪৩০ হিজরি
১৭ এপ্রিল ১০, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ
৪ বৈশাখ, ১৪১৬ বাংলা

সম্পাদক হিমালয়৭৭৭
সহসম্পাদক মুক্তবয়ান কর্তৃক প্রকাশিত

সম্পাদকীয়:
প্রেস্টিজিয়াস ইস্যুই বটে, সম্পূর্ণ একটা সংখ্যা প্রকাশিত হল, অথচ ই-চপের কোন মূল শ্লোগান নেই! এ নিয়ে ব্যাপক বাক-বিতণ্ডা এবং চায়ের কাপে সিডোর তুলার পর অনেকগুলো শ্লোগান তৈরি করা হয়, কিন্তু মূল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন ঐক্যমত্যে পৌছুতে পারিনি আমরা- বাংলা ব্লগিংয়ের একমাত্র দিকপাল এই ই-চপের এমন শ্লোগানবিহীন অগ্রযাত্রা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা, সুতরাং বিশেষ ক্ষমতাবলে এই সংখ্যার শ্লোগান নির্বাচন করা হল- ‘বদলাবো না, বদলা নেব’। তবে উগ্র ফ্যাসিস্টরা বদলাকে বদনা’তে পরিবর্তিত করে শ্লোগানকে বিকৃত করতে পারে, এমন আশঙ্কায় বদনা ছাড়্ আন্দোলনের অগ্রিম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে অনুরোধ জানাচ্ছি ই-চপের সকল গ্রাহক ও শুভান্যুধায়ীকে। যাইহোক, আসমাপ্ত ১১৩৯টি খসড়া সম্পাদকীয় নীতিমালার কযেকটি গতসংখ্যায় উল্লেখ করেছি, তারই ধারাবাহিকতায় এ সংখ্যায়ও কিছু নীতিমালা শেয়ার করছি:
৩. পুঁজিবাদের প্রতিভু ও ব্লগারদের মধ্যে শ্রেণীবৈষম্য সৃষ্টিকারী(?) স্টিকি পোস্টের তীব্র বিরোধী মনোভাব থেকে, ই-চপের কোন সংখ্যা স্টিকি হয়ে গেলে, তৎক্ষণাৎ সংখ্যাটি ড্রাফট করে ফেলা হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কাম্য।
৪. ব্লগারদের মেধা ও মননের বিকাশকে সহায়তা করতে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিকভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা পোস্টদাতাকে পুরস্কৃত করার মহা পরিকল্পনা আছে আমাদের। সাময়িকভাবে, পুরস্কার হিসেবে কয়েকঘন্টার মধ্যে প্রথম পাতায় একসেসের নিশ্চয়তায় আকর্ষণীয় নিক প্রদান করা হবে!!
৫. ব্লগীয় ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা থেকে ব্যান তহবিল, ভবঘুরে সভা, ভাষা প্রতিযোগ, লুডু অলিম্পিয়াড প্রভৃতি পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া দুস্থ ও নতুন ব্লগারদের উৎসাহিত করতে ই-চপ সংখ্যায় প্রাপ্ত মন্তব্যের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাদের ব্লগে পেস্ট করে হিট বৃদ্ধির বন্দোবস্ত করা হবে।

আজকের মত নীতিমালা এখানেই শেষ। ‘বদলাবো না, বদলা নেব’-শ্লোগানে নিরন্তর ছুটে চলবে ই-চপ, আপনাদেরই শুভকামনা অথবা অপবাদে সিক্ত হয়ে।

বাংলাদেশি পহেলা বৈশাখ ট্রেনে আর, বাঙালী পহেলা বৈশাখ বাসে!!

আগে যখন ঢাকায় থাকতাম না, তখন ভরসা ছিল টিভি। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই টিভি চালিয়ে দিতাম ছায়ানটের অনুষ্ঠান দেখব। তখন শুধু ঢাকার অনুষ্ঠান দেখাত। হঠাৎ একবার জানলাম এবার চ্যানেল আই চট্টগ্রামের ডিসি হিলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান লাইভ দেখাবে। আমাদের গানের স্কুল থেকে ওখানে অংশগ্রহণও করছে। এবং, গানের দলের কোন এক ছোট-খাট অংশে আমিও আছি!! উত্তেজনায় আমার রাতের ঘুম হারাম!!;) পরদিন সুন্দরমত সেজে-গুজে গেলাম!! সবাইকে বলে দিলাম টিভিতে দেখাবে, দেইখো সবাই!! আমাদের স্কুলের সময় ছিল সাড়ে দশটায়। কিন্তু, আফসুস!! তখন নাকি খবর দেখানোর সময়। তাই, আমাদের স্কুলকে আর দেখানো হবে না। তারা সব গুছিয়ে চলে গেল আমাদের চোখের সামনে দিয়ে!! :((

এর অনেকদিন পর, ঢাকায় আছি প্রায় ৩ বছর। এর মাঝে পয়লা বৈশাখ করলাম মাত্র গতবার। এবার আগে থেকেই ঠিক করে রাখলাম ঢাকায় থাকব, দুপুরে-বিকেলে ব্লগার আড্ডায় যাবো, সারাদিন টো-টো। উনার সাথে কথা বলা ছিল, এবার পয়লা বৈশাখে আসা হবে না। টিউশনি নাই, তাই এবার আর গিফট-ও নাই!! #:-S
হঠাৎ, গত সপ্তাহের শুরু থেকে কি হল.. "আসতেই হবে, তোমাকে আসতেই হবে। কিছু জানি না। আসবা, আসবা, আসবা।" :-&
[খট করে লাইনটা কেটে মোবাইটা অফ করে দিল। :(]
 
এখানে প্রকাশিত লেখা অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও পুন:প্রকাশ করবেন না। কোন লেখা বেশি পছন্দ হলে নিজের মনে করে নিয়ে যাবার বেলায় একটু জানিয়ে যাবেন।
ব্যক্তিগত অনুভূতির সাথে একীভূত কোন লেখা অন্যত্র শেয়ার করতে পারেন।


Copyright 2009 মুক্ত বয়ান. Powered by Blogger Blogger Templates create by Deluxe Templates. WP by Masterplan modified by Mukto Boyan